ইরানের রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশি কিশোর হাফেজ বশির আহমাদ। প্রতিযোগিতায় ৩০ পারা কোরআন গ্রুপে ১১০ দেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে বশির প্রথম হয়েছে। মাত্র পাঁচ মাসে হিফজ শেষ করেছিল বশির। সে ঢাকার মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির রাষ্ট্রীয় আয়োজক কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাফেজ বশির আহমাদের শিক্ষক ও দেশের স্বনামধন্য হিফজ-শিক্ষক শায়খ নেছার আহমাদ আন নাছিরি।
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন ইরানের সাঈদ মোহাম্মদ সাদেক এবং তৃতীয় হয়েছেন নাইজেরিয়া আব্দুলাহি আব্দুলাহি গারায়ী।
এর ১০ দিন আগে আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছিল বশির। ২০২২ সালে হুফফাজুল কোরআন ফাউন্ডেশনের প্রতিযোগিতায় বশির প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।
হাফেজ বশির আহমাদ হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বেগুনাই গ্রামের মো.আব্দুর রশিদ চৌধুরী ও বুশরা চৌধুরী দম্পতির ছেলে।
তেহরানে ১৯৮২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, ইরাক, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া ও লিবিয়া এই ১২ দেশের প্রতিযোগীদের নিয়ে তেহরান হোসেইনিয়েহ এরশাদে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু হয় বর্তমানে এর পরিধি বেড়ে বিভিন্ন দেশের কোরআন তেলাওয়াতকারীদের সপ্তাহব্যাপী অংশগ্রহণে কোরআন তেলাওয়াতের এই আন্তর্জাতিক আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ইরান থেকে বাংলাদেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান, বশিরের শিক্ষক মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল শায়েখ নেছার আহমাদ আন নাছিরি।
বিমানবন্দরে হাফেজ বশিরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও সংবর্ধনা জানায় সর্বসাধারণ। এসময় বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় হাফেজ শায়েখ নেছার আহমাদ বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের প্রতিযোগী ৩৮ বছরের ইতিহাসে তিন ক্যাটাগরিতে প্রথম হতে পারেনি। বাংলাদেশ একই দিনে একই সঙ্গে ১০ পারা, ২০ পারা এবং ৩০ পারা গ্রুপে প্রথম হয়েছে। একই দিনে ৩টি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে যা নতুন এক বিরল রেকর্ড। বিরল এ রেকর্ড গড়ার পর হাফেজ বশিরের মাথায় চুমু দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি।
শায়েখ নাছিরি আরও বলেন, এর আগে দুবাই, সৌদি আরবসহ অনেক দেশে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন কুরআনের নিরব বিপ্লব চলছে।
এ সময় হাফেজ বশির আহমদ জানায়, বড় হয়ে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা আল—আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআনিক সাইন্স বিষয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা তার। মসজিদে হারামের ইমাম হওয়া তার স্বপ্ন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত আসর বসে ইরানের রাজধানী তেহরানে।
1 Comment