গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক সামাজিক মাধ্যমে

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক সামাজিক মাধ্যমে

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ঐক্যের ডাক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অবস্থান নেওয়ার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছাতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারাও।

নেটিজেনরা ইসলামী ও আরব দেশগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের সকল স্বাধীন জনগণকে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। বিভিন্ন পোস্ট ও লিখনীতে সরব হয়েছেন তারা।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। এসব কর্মসূচি থেকে গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে কঠোর অবস্থান নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা বন্ধের দাবিতে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ সরব হয়েছেন। সব অধিকৃত অঞ্চল ছেড়ে না দেওয়া ও হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত ইসরাইলি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে মুসিলম বিশ্ব।

গত শনিবার আল আকসা মসজিদে হামলা এবং অবৈধ বসতি স্থাপনের জবাব দিতে ইসরাইলে ব্যাপক রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির নেতারা এই অভিযানের নাম দিয়েছেন ‘অপরেশেন আল-আকসা স্টর্ম’।আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার (৭ অক্টোবর) হামাসের হামলায় অন্তত ২২ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ শতাধিক। এছাড়াও এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ১২শ ছাড়িয়েছে। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গাজায় হতাহতের সংখ্যা কয়েক হাজার।

হামাসের নজীরবিহীন অভিযানের প্রশংসা করে জেষ্ঠ্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, অব্যাহতভাবে মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদের অবমাননা এবং হামলা, এবং ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপরে ধারাবাহিক নির্যাতনের প্রতিবাদে আজকে হা-মাস আকস্মিকভাবে ইসরাইলের অভ্যন্তরে যে হামলা চালিয়েছে,বলা যেতে পারে ১৯৪৯ সালের পরে এ ধরনের হামলা এই প্রথম। এই হামলায় হামাস ৫ হাজারের অধিক হ্যআন্ড মেড মিসাইল ইসরাইলের অভ্যন্তরে নিক্ষেপ করেছে। এছাড়াও বুলডোজার দিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙে অধিকৃত এলাকায় প্রবেশ করেছে। পাশাপাশি ম্যানুয়ালি তৈরি প্যারাসুট ব্যবহার করে প্যারা গ্লাইডিং এর মাধ্যমে অধিকৃত এলাকায় প্রবেশ করেছে বিপুল সংখ্যক হামাস সদস্য। অধিকৃত এলাকা থেকে দখলদার ইসরাইলিদেরকে বের করে দিয়েছে তারা। এ সময় ইসরাইলিদের প্রতিরোধে সৃষ্ট যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৪৫ জন ইসরাইলি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও সহস্রাধিক ইসরাইলি আহত হয়েছে একই ঘটনায়। এছাড়াও হামাস সদস্যরা ইসরাইলিদের বেশ কিছু অ’স্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে, অনেক ট্যাংক পু’ড়িয়ে দিয়েছে এবং ইসরাইলের এক জেনারেল, বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যসহ ৫০ জন ইসরাইলিকে আটক করেছে। এ সময় হামাস সদস্যরা সাতটি ইসরাইলি উপশহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এরপর ইসরাইলিরা গাজা এলাকায় পাল্টা বিমান আক্রমণ করে এবং অধিকৃত এলাকায় হামাসের সাথে পাল্টা যুদ্ধে প্রায় ২০০ সাধারণ ফিলিস্তিনি ও হামাস সৈন্য নিহত হয়েছে এবং সহস্রাধিক আহত হয়েছে।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস ও ফাতাহ মুভমেন্ট এ পর্যন্ত যে সমস্ত হামলা করেছে তার মধ্যে এই হামলা ছিল সবচেয়ে বড় এবং এই হামলায় ইসরাইলের সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি ও নিরাপত্তা ধারণায় ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা তৎপরতায় বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ইসরাইলি কোন গোয়েন্দা সংস্থা এই হামলার ব্যাপারে নূন্যতম ধারণা করতে পারেনি। এই হামলা নিয়ে পাশ্চাত্য, এমনকি ভারতও ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইরান ও কাতার ছাড়া আর কোন মুসলিম দেশ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ায় নাই। তবুও এই হামলা ও হামলা পরবর্তী বন্দী মুক্তি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি বড় নাড়া দেবে সন্দেহ নেই।

ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানিয়ে রফিকুল আলম লিখেছেন, মাতৃভূমির প্রতি অগাধ প্রেম ও ভালোবাসা বাস্তুহারা ও কোণঠাসা ফিলিস্তিনিদের দুর্দমনীয় যোদ্ধায় পরিণত করেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সাহায্যপুষ্ট দখলদার ইসরাইল ভূমিপুত্র ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে চিরতরে ধূলোয় মিশিয়ে দিতে চেষ্টা করেছে, ইতিহাস সাক্ষী, তাঁরা ততবারই ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন। পশ্চিমারা টনে টনে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়েও দেশপ্রেমিক ফিলিস্তিনিদের দমায়ে রাখতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ্।

ইসরায়েলি বর্বরতা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ সোহেল রাঢ়ি লিখেছেন, মুসলিম বিশ্ব এক হয়ে এর চরম প্রতিশোধ নেয়া হোক। ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিনের সাথেই যুদ্ধ ঘোষণা করেনি তারা গোটা মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সুতরাং ইসরাইলের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ঘোষণা করা একান্ত অপরিহার্য ঈমানী দায়িত্ব।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করে খাইরুল হাসান লিখেছেন, পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র আর সুপার পাওয়ার আমেরিকার অন্ধ সমর্থনে ইজরায়েল দীর্ঘ দিন যাবৎ ফিলিস্তিন নাগরিকদের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সহ একতরফা ভাবে নির্যাতন করে নিশ্চিহ্ন করতে যাচ্ছে। বিশ্ব বিবেক ফিলিস্তিনের ব্যাপারে নির্বিকার। ফিলিস্তিনেরা প্রতিবাদ করলেই সন্ত্রাসী তকমা দেওয়া হয়।ফিলিস্তিনরা যে মানুষ এবং বাচার অধিকার আছে – তা পশ্চিমা সহ আমেরিকা এবং তাদের সহযোগিরা মানতে নারাজ। এই হলো মানুষের বিবেক আর বিচার। ফিলিস্তিনের একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভরসা।। বিশ্ব মোরলরা ইচ্ছে করলেই এর সমাধান করতে পারে। কিন্তু করে না।

গোলাম মোস্তফা লিখেছেন, উদ্ভাস্ত শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে নিজ দেশে তারা আজ শরণার্থী। পরাধীনতার শিকল বয়ে বেড়াচ্ছে বছরের পর বছর। পৃথিবীর সব দেশের মানুষের জন্য মানবাধিকারের এক রকম নিয়ম।আর ফিলিস্তিনিদের জন্য অন্যরকম এখানে এসেই যেন আটকে যায় সবকিছু।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *