জুমাবারে যে আমলগুলো করতে বলেছেন প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ

জুমাবারে যে আমলগুলো করতে বলেছেন প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ

সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিনের আমল অনেক বেশি ও গুরুত্বপূর্ণ। কুরআন- হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দ্বারা এ দিনের বিশেষ মর্যাদার কথা জানা যায়। রাসুল সা. বলেন, নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ) অন্য হাদিসে আছে, যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে এর মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন।’ জুমার দিনকে মুসলমানদের ঈদের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

জুমার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সা. বলেছেন, এক জুমা থেকে অপর জুমা উভয়ের মাঝের (গুনাহের জন্য) কাফ্ফারা হয়ে যায় যদি কবিরা গুনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে। (মুসলিম)

রাসুল সা. অন্য হাদিসে বলেন যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের নিকটবর্তী হবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে ও চুপ থাকবে তার জুমার নামাজ আসার প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সওয়ার হবে।’ (তিরমিজি)

জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল

১. জুমার দিন গোসল করা। যাদের ওপর গোসল ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল সা. ওয়াজিব বলেছেন।
২. জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. মিসওয়াক করা।
৪. উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
৫. মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৬. মনোযোগ সহকারে খুৎবা শোনা এবং খুৎবা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
৭. আগে থেকেই মসজিদে যাওয়া।
৮. সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৯. জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
১০. নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস চেয়ে এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা।
১১. কেউ খুৎবার সময় কথা বললে ‘চুপ করুন’ এতোটুকুও না বলা।
১২. মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা।
১৩. খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা।
১৪. এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে।

জুমার দিনের বিশেষ কিছু দোয়া

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এদিনে বিশেষ কিছু আমল রেখেছেন। এসব বিশেষ আমলের মাঝে রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে গুনাহ মাফের প্রতিশ্রুতি।

জুমার দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত আছে। রাসূল সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর না উঠে ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার এই দরুদ শরিফ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব তার আমল নামায় লেখা হবে।

দোয়াটি হলো: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলিমা।

জুমার দিনের আরও কিছু আমলের মধ্যে রয়েছে-

১. সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা। জুমার দিনে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করলে কিয়ামতের দিন আকাশতুল্য একটি নূর প্রকাশ পাবে।
২. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা এবং বেশি বেশি জিকির করা মুস্তাহাব।
৩. জুমার রাত (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত) ও জুমার দিনে নবি করিম সা. এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠের কথা বলা হয়েছে। এমনিতেই যে কোনো সময়ে একবার দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা পাঠকারীকে দশটা রহমত দান
করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য দশবার রহমতের দোয়া করেন।
৪. জুমার নামাজের পূর্বে দুই খুতবার মাঝখানে হাত না উঠিয়ে মনে মনে দোয়া করা।
৫. সূর্য ডোবার কিছুক্ষণ আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গুরুত্বের সাথে জিকির, তাসবীহ ও দোয়ায় লিপ্ত থাকা।

লেখক- মুফতি আবদুল্লাহ তামিম

সম্মানিত পাঠক, আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে আপনাকে স্বাগতম

Please Follow US – Halaltune.com | Facebook 

Please Subscribe US – Halal Tune Blog | Youtube

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *