তামিম আদ-দারি (রা.) বহু রহস্যের ধারক সাহাবি ছিলেন। স্বয়ং রাসুল (সা.) তাঁর থেকে দাজ্জাল ও ‘জাসসাসাহ’ তথা দাজ্জালের গোয়েন্দার বিবরণ শোনেন এবং মসজিদে নববীর মিম্বরে বসে তা সাহাবায়ে কেরামের সামনে উপস্থাপন করেন। (আত তাবাকাতুল কুবরা ৭/২৮৬; সিয়ারু আলামিন নুবালা ২/৪৪২)
তামিম আদ দারি (রা.) নবম হিজরি সনে তাঁর গোত্রের ৯ জন লোকসহ রাসুল (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন আবেদ ও অধিক কোরআন তিলাওয়াতকারী। এক সপ্তাহে কোরআন খতম করতেন। ইবনে সিরিন (রহ.) বলেন, তিনি নামাজে এক রাকাতে পুরো কোরআন খতম করতেন। কখনো একেকটি আয়াতকে বারবার পড়তেন এবং কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাতেন। তাহাজ্জুদ তাঁর কখনো বাদ পড়ত না।
একদিন ঘুমের মধ্যে রাত কেটে গেল; তাহাজ্জুদ পড়তে পারলেন না। এরপর দিন থেকে দীর্ঘ এক বছর পর্যন্ত আর ঘুমাননি। শুধু নামাজে ব্যবহারের জন্য তিনি একটি চাদর ক্রয় করেছেন, যার মূল্য ছিল এক হাজার দিরহাম। এভাবে আরেকটি স্যুট খরিদ করেছেন, তাও এক হাজার দিরহাম মূল্যের, যা তিনি লাইলাতুল কদর-সম্ভাবনা রাতে পরিধান করতেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ২/৪৪২, ৪৪৫, 887 )
তামিম আদ দারি (রা.) একবার নৌ-ভ্রমণকালে একটা দ্বীপে গিয়ে ওঠেন এবং সেখানে ‘জাসসাসাহা (দাজ্জালের গোয়েন্দা) ও দাজ্জালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সঙ্গে অনেক বিষয়ে মতবিনিময় করেন। আবু দাউদ ও মুসলিম শরিফে এ বিষয়ে একাধিক বর্ণনা আছে।
রাসুল (সা.) তামিম ও তাঁর ভাই নুআইম ইবনে আউস (রা.)-কে সিরিয়ার ‘হাবরা” ও “বাইতু আইনুন’ নামক দুটি ভূখণ্ডের বন্দোবস্ত দেন। আল্লামা ওয়াকিদি (রহ.) বলেন, সিরিয়াতে ওই দুটি ভূখণ্ড ছাড়া অন্য কোনো ভূমি রাসুল (সা.)-এর মালিকানায় ছিল না।
তামিম আদ-দারি (রা.) ইসলাম গ্রহণের পর থেকে রাসুল (সা.) এর সঙ্গে বিভিন্ন যুদ্ধ ও অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং মদিনাতেই অবস্থান করেন। খলিফা উসমান (রা.)-এর শাহাদাতের কিছুকাল পর তামিম আদ-দারি (রা.) মদিনা ছেড়ে চলে যান সিরিয়ায়। (আত তাবাকাতুল কুবরা ৭/২৮৬)
তামিম আদ দারি (রা.) থেকে ১৮টি হিািদস বর্ণিত আছে। তিনি ৪০ হিজরি সনে তৎকালীন মুলকে শামের অন্তর্গত ফিলিস্তিনে ইন্তেকাল করেন।