তীব্র দাবদাহে নবীজি (সা.)-এর নির্দেশনা

তীব্র দাবদাহে নবীজি (সা.)-এর নির্দেশনা

পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে মহান আল্লাহ মহাজাগতিক নিদর্শনাবলির প্রতি গুরুত্ব সহকারে দৃষ্টি দিতে বলেছেন। এক আয়াতে এসেছে, ‘আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্নদের জন্য চিন্তার উপকরণ আছে।” (সুরা আন- নুর, আয়াত, আয়াত : 88 )

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আসমান ও জমিন সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তমানে নিদর্শন আছে বোধসম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে, (তারা বলে) পরওয়ারদিগার, এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি। সব পবিত্রতা তোমারই, আমাদের তুমি দোজখের শাস্তি থেকে বাঁচাও। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৯০-১৯১)

আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে একটি শিক্ষণীয় বিষয় হলো শীত, গ্রীষ্ম, বসন্ত ও শরৎ ঋতুর পালাক্রমে আগমন। সুতরাং প্রচণ্ড গরমের সময় বান্দা যেন জাহান্নামের গরমের কথা স্মরণ করে, এই দুনিয়ার প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করে। আর যেন উপলব্ধি করে যে যা কিছু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে এবং তার ক্রোধ ও শাস্তি থেকে মুক্তি দেয়, সেসব বিষয়ে আত্মনিয়োগ করা আবশ্যক। মহান আল্লাহ মুনাফিকদের উক্তি ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধে যোগ না দিয়ে তাদের পেছনে থাকার কারণ বর্ণনা করে বলেন, ‘এবং তারা বলল, গরমের মধ্যে অভিযানে বের হইয়ো না। বলুন, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচুর, যদি তারা বুঝত।’ (সুরা আত-তাওবা, আয়াত : ৮১)

শীত ও গ্রীষ্মের ব্যাপারে হাদিসের ব্যাখ্যা হলো, শীত ও গ্রীষ্মের তীব্রতা আসে জাহান্নামের নিঃশ্বাস থেকে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব, আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ তখন তাকে দুটি নিঃশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিঃশ্বাস শীতকালে, আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।” (বুখারি, হাদিস : ৩২৬০ )

সুতরাং মানুষের কর্তব্য হলো হৃদয় ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করা। মহান আল্লাহর জন্য শোকরিয়া যে তিনি এ যুগে স্বস্তির মাধ্যম ও গরমের কষ্ট লাঘবের উপাদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যা আগের যুগে ছিল না। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমরা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করতাম। তখন প্রচণ্ড গরমের কারণে আমাদের কেউ কেউ সেজদার স্থানে তার কাপড়ের একাংশ রাখত।’ (সহিহ বুখারি)

বর্তমানে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দেশ? ওষ্ঠাগত মানুষ ও পশুপাখির জীবন? হুমকির মুখে ফল ও ফসল? এ সময় প্রয়োজন রহমতের বৃষ্টি। আর বৃষ্টির জন্য প্রয়োজন ‘সালাতুল ইসতিসকা’ (বৃষ্টির সালাত)। প্রিয় নবী (সা.) অনাবৃষ্টিতে লোকদের নিয়ে মাঠে বের হয়ে যেতেন এবং ইসতিসকা তথা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায় করতেন। (বুখারি, হাদিস : ১০১২)

মহান আল্লাহ প্রকৃতি ও পরিবেশ আমাদের অনুকূল করে দিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *