প্রথমে নিজের ঘরে তাবলিগ করা জরুরি?

প্রথমে নিজের ঘরে তাবলিগ করা জরুরি?

যায়েদ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, সুযোগ পেলে তাবলীগ জামাআতে চিল্লাও লাগায় । আমাদের মহল্লার মসজিদের ইমাম সাহেবের বক্তব্য হলো, তুমি আগে তোমার এলাকার মানুষকে এবং নিজের ঘরের সদস্যদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দাও। তোমার ঘরে বেনামাজি রয়েছে, আবার তোমাদের মহল্লায় কত যে বেনামাজি রয়েছে তার কি কোনো হিসাব আছে? প্রথমে ঘরে ঘরে তাবলিগ করতে থাকো, এরপর বাইরে যাও। দলিল হিসেবে নিম্নের

আয়াত পেশ করে:

وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱصْطَبِرْ عَلَيْهَا উক্ত বক্তব্য কতটুকু শরীয়তসম্মত?

উত্তর: নিজের পরিবার ও আত্মীয়ের হক অন্য সকলের আগে, এ কথা সর্বজন স্বীকৃত। তবে এর দ্বারা উদ্দেশ্য এটা নয় যে, পরিবার এবং এলাকাবাসী পুরোপুরি দ্বীনের ওপর এসে না গেলে অন্যত্র তাবলিগ করা যাবে না।

যেমন, কোথাও দীনি মাদ্রাসা রয়েছে, সেখানে এ কথা বাধ্য করা হয়নি যে, উক্ত মাদ্রাসার এলাকায় প্রত্যেক মানুষ আলেমে দীন হতে হবে, তখনই অন্য এলাকার ছাত্রদেরকে ভর্তি হওয়ার জন্য তারগিব দেয়া যাবে।

তেমনিভাবে কোনো বুযুর্গের ব্যাপারেও তো এ কথা জানা নেই যে, নিজের পরিবার এবং এলাকার মানুষদেরকে পুরোপুরি ইসলাহ ব্যতীত বাইরের কাউকে বায়আত করেননি। কোনো হাফেজ বা আলেম বাইরের ছাত্রদের পড়ানোর জন্য নিজের এলাকার ছাত্রদেরকে আগে পড়াতে হবে এমন বাধ্য-বাধকতা তো করেননি। বরং পরিবার বা এলাকার কেউ দাওয়াত কবুল করে হেদায়াতপ্রাপ্ত হয়নি, কিন্তু বাইরের লোকজন ঠিকই হেদায়াতপ্রাপ্ত হচ্ছে।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্য ‘তায়েফ গমনের পূর্বে কি সকল মক্কাবাসী মুসলমান হয়ে গিয়েছিল? উল্লিখিত আলোচনা ঐ সময় গ্রহণযোগ্য হবে যখন অন্যকে তাবলিগ করা বা দাওয়াত দেয়া উদ্দেশ্যে হয়। পক্ষান্তরে, যদি তাবলিগ জামাআতে সময় লাগানোর দ্বারা নিজের ইসলাহ মাকসাদ হয়, তাহলে তো কোনো প্রশ্নই আসবে না।

রেফারেন্স গ্রন্থ : জামেউল ফাতাওয়া
লেখক: মুফতি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ সংকলন: মাওলানা হুসাইন আহমাদ খান

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *