যে দোয়া পড়লে জান্নাত ওয়াজিব

যে দোয়া পড়লে জান্নাত ওয়াজিব

ইসলামে দোয়ার গুরুত্ব অনেক। এটি নামাজ-রোজা-হজ-জাকাতের মতো আলাদা একটি ইবাদত এবং এর আলাদা ফজিলত ও সওয়াব রয়েছে। সূরা মুমিনের ৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে ইরশাদ করেন, “তোমাদের রব বলেন; তোমরা আমার নিকট দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। নিশ্চই যারা আমার ইবাদতে অহঙ্কার করে, তারা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”

নবী করিম (স.) বলেন, “নিশ্চয়ই দোয়া-ই ইবাদত’ (তিরমিজি: ২৯৬৯)। তিনি দোয়াকে শুধু ইবাদত বলে ক্ষান্ত হননি, আরও বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মগজ।’ (তিরমিজি: ৩৩৭১)

পরম দয়াময় প্রভু তাঁর হাবিবের মাধ্যমে বান্দাদের এমন কিছু ছোট ছোট দোয়া শিখিয়েছেন, যা খুব সহজে আমল করা যায়। অথচ ফজিলত অনেক বেশি। তার মধ্যে একটি দোয়া এমন, যেটি পড়লে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, পাঠকারীকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর দায়িত্ব স্বয়ং বিশ্বনবী (স.)-এর।

হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- “যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে, তার জন্যে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।

উচ্চারণ: রাদিতু বিল্লাহি রাব্বার্ট ওয়া বিল ইসলামী দ্বিনাউঁ ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যাঁও ওয়া রাসুলা’।

অর্থ: “আমি আল্লাহকে রব, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদ (স.)-কে রাসুল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি।” (মুসলিম: ১৮৮৪; আবু দাউদ: ১৫২৯; মুজামু কাবির: ৮৩৮; মুজামুস সাহাবাহ: ১৬৯৬)

এ দোয়া পাঠকারীকে জান্নাতে পৌঁছানোর দায়িত্ব সম্পর্কে হাদিস—

হজরত মুনাইজির (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি- ‘যে ব্যক্তি সকালে বলবে, ‘রাদিতু বিল্লাহি রব্বাš ওয়া বিল ইসলামী দ্বিনাউ ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যা’ তাকে হাতে ধরে জান্নাতে পৌঁছানোর জিম্মাদার আমি। (মুজামুল কাবির: ২০/৩৫৫; সিলসালাতুস সাহিহা: ২৬৮৬; আত-তারগিব ওয়াত- তারহিব: ৯৭১)

সাওবান (রা.) আল্লাহর রাসুল (স.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় উপরোক্ত দোয়াটি পড়বে, তার হক হয়ে যায় যে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।’ (আল-আজকার: ২১৪)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল তিনবার এই দোয়া পড়বে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নেকি বৃদ্ধি করে সন্তুষ্ট করবেন।’ (তিরমিজি: ২/১৭৬)

আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব থেকে বর্ণিত আছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছেন —’যে আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদ (স.)-কে রাসুল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছে— সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে।’ (মুসলিম : ৩৪)

শাহাদাহ’র সংযোজনসহ একই অর্থের আরেকটি দোয়ার কথা এসেছে হাদিসে। সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আজান শুনে নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে, তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ দোয়াটি হলো-

উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু; রাদিতু বিল্লাহি রাব্বার্ড ওয়া বিল ইসলামী দ্বিনাউ ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যাঁও ওয়া রাসুলা।

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি— আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক এবং তাঁর কোনো শরিক নেই। মুহাম্মদ (স.) তাঁর বান্দা ও রাসুল। আমি আল্লাহকে রব, মুহাম্মদ (সা.)-কে রাসুল এবং ইসলামকে দ্বিন হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি।’ আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত দোয়াগুলো পাঠ করার মাধ্যমে বিশ্বনবীর ঘোষণা অনুযায়ী জান্নাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *