শাওয়াল মাসে বিয়ে করা মুস্তাহাব

শাওয়াল মাসে বিয়ে করা মুস্তাহাব

বিয়ে নবীদের অন্যতম সুন্নত। আল্লাহ তা’আলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করার পর হাওয়া (আ.)-কে তাঁর জীবনসঙ্গীরূপে সৃষ্টি করেন এবং তাঁদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনো পৃথিবীতে চলমান। এমনকি অনন্ত অনাবিল সুখের জান্নাতেও নারী-পুরুষ পরস্পরের সঙ্গবিহীন অতৃপ্ত থাকবে। ইরশাদ হয়েছে, আর তাঁর (আল্লাহ) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও মায়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ২১)

নবীজি (সা.) বিয়েকে ঈমানের অর্ধেক আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি বিয়ে করল, সে ঈমানের অক পূর্ণ করল। অতএব, বাকি অর্ধেকে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে। (সহিহুল জামে, হাদিস : ৬১৪৮ )

এমনকি পরিবারে বিয়ের উপযুক্ত কেউ থাকলে তার দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করার ব্যাপারে কোরআনে নির্দেশনা রয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস- দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। (সুরা : আন-নুর, আয়াত : ৩২)

কোনো সাহাবাদের মতে, শাওয়াল মাসে বিয়ে করা মুস্তাহাব। নবীজি (সা.) আয়েশা (রা.)-কে এই মাসে বিয়ে করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বিয়ে করেন শাওয়াল মাসে এবং শাওয়াল মাসেই আমাদের বাসর হয়। আর আয়েশা (রা.) শাওয়ালে তাঁর (সম্পর্কীয়) মেয়েদের বাসর হওয়া পছন্দ করতেন। (তিনি বলতেন) : তাঁর কোন স্ত্রী তাঁর কাছে আমার চাইতে অধিক ভাগ্যবতী ছিল? (নাসায়ি, হাদিস : ৩২৩৬)

ইমাম নববী (রহ.) সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যা গ্রন্থে এই হাদিস উল্লেখ করার পর বলেন, এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে শাওয়াল মাসে বিয়ে দেওয়া, বিয়ে করা ও বাসর করা মুস্তাহাব। আমাদের পূর্বসূরিরাও এই হাদিস দ্বারা শাওয়াল মাসে বিয়ে মুস্তাহাব হওয়ার দলিল দিতেন।

আয়েশা (রা.) এই মাসে বিয়ে মুস্তাহাব বলার কারণ হলো, জাহেলি যুগে এই মাসে বিয়ে দেওয়া, করা ও বাসর করাকে অপছন্দনীয় মনে করা হতো। যার কোনো ভিত্তি ছিল না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *