জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ১৭তম আবর্তনের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণব দাস সনাতন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। গত ১০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পরিবর্তন করে তার নতুন নাম রাখা হয় আহমাদ কাবির। ইসলাম ধর্ম কেন গ্রহণ করলেন, কীভাবে ইসলামের প্রতি টান আসলো সে ব্যাপারে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।
আসসালামু আলাইকুম…..
আহমাদ: ওয়ালাইকুম সালাম।
আপনি পরিবারের কত তম সন্তান?
আহমাদ: আমি পরিবারের চতুর্থ সন্তান। পরিবারের সবার ছোট। আমার তিন বোন রয়েছে।
* কখন থেকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে আগ্রহী হলেন?
আহমাদ: ২০১৬ সালে আমার মেজো বোন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। আমার বোনের বন্ধুরা তাকে ভালো ভালো বই দিতো। সেগুলো নিয়ে পড়াশোনা করে আপু বুঝতে পারে আসল ধর্ম ইসলাম। এরপরই আমার মনে ইসলামের প্রতি তাড়না জাগে। আপু যে মুসলিম হলেন, কেন হলেন? এর পেছনে কারণ কী? তখন আপু আমাকে বলতো তুইও ইসলাম নিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারিস। সেই থেকে আমি চিন্তা শুরু করি ইসলাম নিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় ৪ বছর আগে ইসলাম ধর্মের বিষয়গুলো দেখা শুরু করি।
* আপনার বোন এখন কোথায় আছেন?
আহমাদ: আপু এখন তার হাজব্যান্ড নিয়ে ঢাকায় থাকেন।
* দ্রুত ইসলাম গ্রহণ করার কারণ?
আহমাদ: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো প্রায় তিন মাস আগে ঘুমন্ত অবস্থায় কয়টা স্বপ্ন দেখি। তার মধ্যে একটা ছিল আমি ঘুমের ভেতর স্বপ্নে দেখি নামাজ পড়ছি। এরপর আমি ভাবতে লাগলাম, আমি কি হেদায়েত পেতে দেরি করে ফেলছি? তাই দ্রুতই মার্চের ১০ তারিখ বেরাইদ পূর্বপাড়া জামে মসজিদে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি।
* নামাজ কবে থেকে পড়া শুরু করলেন?
আহমাদ: আমি ইসলাম ধর্ম আগে থেকেই মেনে নিয়েছিলাম। আগে লুকিয়ে লুকিয়ে নামাজ পড়তাম। ১০ মার্চের পর প্রকাশ্যে নামাজ পড়া শুরু করছি।
* নাম পরিবর্তন কীভাবে করলেন?
আহমাদ: এফিডেভিটের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করেছি।
* এখন অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়তে হয় না?
আহমাদ: এলাকার বড় ভাই, স্থানীয় সুধিজন, কাছের বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের সহযোগিতায় চলছি।
* পড়ালেখার ব্যাপারে কিছু বলবেন…..
আহমাদ: আমি বাড্ডার বেরাইদে পড়ালেখা করেছি। এখন তো আল্লাহর রহমতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি।

* পরিবার কী বলছে?
আহমাদ: আমি পুরোপুরি পরিবার থেকে আলাদা এখন। বাড্ডার বেরাইদে এক বন্ধুর পরিবারের সঙ্গে আছি। বর্তমানে পরিবার ছেড়ে বন্ধুদের সঙ্গে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি। আর পরিবারের তো মন খারাপ হবেই।
* মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়?
আহমাদ: যেখানে আছি এখান থেকে আমার পরিবার কাছেই। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। কারো সঙ্গে এখনো দেখা হয়নি।
* আপনার পরিবার অফিশিয়ালভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
আহমাদ: না। এখনো আমার বিষয়ে তারা অফিশিয়ালভাবে কিছু করেনি। সবার মন খারাপ, আমাকে তারা বড় করেছেন। অনেক কিছু বললেও আমি ইসলামের প্রতি অটল আছি এবং থাকব, ইনশাআল্লাহ। গত তিন থেকে চার বছর ধরে নিজের সঙ্গে সংগ্রাম করে সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ।