ঈদের নামাজ ও নামাজের নিয়ম-কানুন

ঈদের নামাজ ও নামাজের নিয়ম-কানুন

ঈদের দিন জামায়াতের সাথে ২ রাকাত সালাত আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল এটি। এছাড়া ঈদের দিনে আরো কিছু সুন্নত আমল রয়েছে। ঈদের সালাতে অতিরিক্ত ৬ টি তাকবীর দেয়া হয়ে থাকে। বছর ঘুরে ২ বার আমাদের জীবনে ঈদ আসে। তাই ঈদের সালাতের নিয়মটি ভূল যাওয়া স্বাভাবিক। আগামী ঈদের দিন যেন আমরা জেনে বুঝে, নিশ্চিত হয়ে ঈদের সালাত আদায় করতে পারি এজন্য ঈদের ২ রাকাত সালাতের নিয়মটি হানাফী ফিকহ অনুযায়ী ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হলো।

১) নিয়ত করা –
অন্যান্য সালাতের ন্যায় এই সালাতের জন্যও নিয়ত করা ফরজ। আমরা ঈদুল ফিতরের ২ রাকাত ওয়াজিব সালাত আদায় করার জন্য কাতারবদ্ধ হয়েছি – মনে মনে এই সংকল্প বা intention থাকাই যথেষ্ট। আরবি বা বাংলায় নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্য মুখে উচ্চারণ করে “ নিয়ত পড়া’” জরুরি নয়।

২) তাকবীরে তাহরিমা বলে সালাত শুরু করা

ইমাম সাহেব তাকবীরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে সালাত শুরু করবেন। এরপর অন্যান্য সালাতের ন্যায় ইমাম সাহেব ও আমরা মনে মনে সানা পড়ব

সানা – سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি, আপনার নাম বরকপূর্ণ, আপনার মাহাত্ন সুউচ্চ এবং আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই ।

৩) ১ম রাকাতঃ অতিরিক্ত ৩ তাকবীর
“সানা” পড়া শেষ হলে ইমাম সাহেব ৩ বার “আল্লাহু আকবার” বলে তাকবীর দিবেন।
প্রথম তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিবে।
দ্বিতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিবে।
তৃতীয় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত নাভির নিচে বাঁধবো । ( প্রথম ২ টি তাকবীরের মত হাত চেড়ে দিবে না )
এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পড়বেন। অন্য কোন সূরা মিলাবেন। এরপর অন্যান্য সালাতের ন্যায় রুকু সিজদা আদায় করে ইমাম সাহেব ১ম রাকাত শেষ করে ২য় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা যথারীতি ইমামের অনিসরণ করব।

৪) ২য় রাকাতঃ অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর
২য় রাকাতের শুরুতে ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা পড়বেন। এরপর অন্য কোন সূরার অংশ তিলাওয়াত করবেন। রুকুতে যাওয়ার আগে ইমাম সাহেব ৩টি তাকবীর দিবেন।

প্রথম তাকবীরের সময় কান্ পর্যন্ত হাত উঠিয়ে  হাত ছেড়ে দিব।
দ্বিতীয়  তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিব।
তৃতীয় তাকবীরের সময়েও কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিব। (১ম রাকাতের ৩য় তাকবীরের মত হাত বাঁধাব না, বরং হাত ছেড়ে দিব)
এরপর ইমাম সাহেব চতুর্থ তাকবীর বলবেন। এটি হচ্ছে রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর। চতুর্থ তাকবির শুনে আমরা রুকুতে  চলে যাব। এরপর বাকি সকম নিয়ম কানুন অন্যান্য সালাতের মতই। আমরা ইমামকে অনুসরন করে ২ রাকাত সালাত শেষ করব।

সালাতের পর ইমাম সাহেব ২ টি খুতবা দিবেন।যা শোনা ওয়াজিব। অনেকেই দেখা যায় সালাত শেষে উঠে চলে যান। এতা গর্হিত অন্যায় একটি কাজ।

সংক্ষেপে ঈদের সালাতের মূল পার্থক্য

ঈদের সালাতে আমরা মুলত অতিরিক্ত তাকবীর নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকি। অতিরিক্ত তাকবীরের সমস্য দেখা যায় কেউ হাত তুলে হাত চেড়ে দেন,কেউ বা আবার বেঁধে ফেলেন। কেউ বা আবার ভূলে রুকুতে চলে যান।আশা করি আসন্ন ঈদের সালাতে আমাদের এই ভূলগুলো হবে না।

সংক্ষেপে তাকবীরের নিয়মটা বলা যায় এভাবেঃ-

প্রথম রাকাতের সানার পরে ২ বার কান পর্যন্ত হাত তুলে ছেড়ে দিব। ৩য় তাকবীরেহাত বেঁধে ফেলবে।
আর ২য় রাকাতে রুকুর আগে ৩বার তাকবীরের সময়ি কান পর্যন্ত হাত তুলে হাত ছেড়ে দিবো। চতুর্থ তাকবীরের সময় রুকুতে যাব।

আল্লাহ আমাদের কে সঠিক ভাবে ঈদের সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুক। আমীন।

ঈদের দিনের অন্যান্য আমলের বিসয়গুলো জানতে এখানে ক্লিক করুন 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *