দুই বছর ধরে প্রস্তুতি, অস্ত্র-গোলাবারুদ নিজেরাই বানাচ্ছে হামাস

দুই বছর ধরে প্রস্তুতি, অস্ত্র-গোলাবারুদ নিজেরাই বানাচ্ছে হামাস

হামাস নেতা আলী বারাকা জানিয়েছেন, ইসরাইলে হামলার আধাঘণ্টা পর মিত্র হিজবুল্লাহ, ইরান এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়; জানানো হয় তুরস্ককেও।

ইসরাইল ভূখণ্ডে গত শনিবার যে হামলা চালায় হামাস, তার জন্য দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনটি। আর এ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গড়ে তুলেছে অস্ত্র, গোলাবরুদ তৈরির কারখানা।

ওই হামলার একদিন পর লেবাননে হামাসের একজন শীর্ষ নেতা আরটিঅ্যারাবিক নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য দিয়েছেন। আমরা প্রচুর গোলাবারুদ তৈরি করেছি, স্থানীয়ভাবে আমাদের সবকিছুর কারখানাই আছে, সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন হামাসের বিদেশ বিষয়ক প্রধান আলী বারাকা।

তিনি জানান, এসব কারখানায় ১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরপাল্লার রকেট ছাড়াও মর্টার এবং মর্টার শেলও তৈরি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রও তৈরি হচ্ছে কারখানাগুলোতে।

গত শনিবার ভোরে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট ছুঁড়ে ইসরাইলকে হতবিহ্বল করে দিয়েছিল হামাস। এছাড়া প্যারাগ্লাইডারে আকাশপথে ও সীমান্ত ডিঙিয়ে মোটরসাইকেলে করে ইসরাইলে ঢুকে সাঁড়াশি হামলা চালায় হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা।

এরপর থেকেই আলোচনায় ছিল, ইসরাইলের মতো বিপুল সামরিক শক্তিধর একটি দেশের কড়া নজরদারি এড়িয়ে কিভাবে এতটা পরিকল্পিত হামলা চালায় হামাস। এতো অস্ত্র, গোলাবারুদই বা পেল কোথায় সংগঠনটি, তা নিয়েও ছিল জল্পনা।

হামাস নেতা আলী বারাকা বলেন, আমাদের কালাশনিকভ রাইফেল ও এর বুলেট তৈরির কারখানা আছে। রাশিয়ার অনুমোদন নিয়েই আমরা এসব বুলেট তৈরি করছি। গাজাতেই আমরা এসব তৈরি করছি।

তিনি আরও বলেন, হামলার আধাঘণ্টা পর আমাদের মিত্র হিজবুল্লাহ, ইরান এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তুরস্ককেও জানানো হয়। তবে বারাকা এই হামলা পরিকল্পনায় বাইরের কোনো সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি।

মিত্ররা আমাদের শুধু অস্ত্র অর্থ দিয়ে সহায়তা করে। সবার আগে রয়েছে ইরান, তারা আমাদের অস্ত্র ও অর্থ দেয়; হিজবুল্লাহও আছে। ইসরাইলে হামলার পর রাশিয়াও খোঁজখবর নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের সবশেষ তথ্য ও লড়াইয়ের লক্ষ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।

ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া হামাস-ইসরাইল সংঘাতের কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিভ্রান্তিতে পড়ে যাওয়ায় রাশিয়া খুশি বলেও জানান আলী বারাকা। আলী বারাকা বলেন, আমাদের অনেক সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবজ্জীবন কারাভোগ করছেন। আমরা তাদের মুক্ত করে দিতে বলেছি। তারা বন্দি বিনিময় করে, সম্প্রতি ইরানের সঙ্গেও করেছে। তাহলে আমার সঙ্গে করছে না কেন?

লেবাননে ফিলিস্তিনি উপ-দলগুলো সাধারণ গাজা ও পশ্চিম তীরে তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না ভ্রমণে কড়াকড়ি থাকায়। তাছাড়া লেবাননের এই ফিলিস্তিনিদের একটা বড় অংশ কখনই মূল ভূখণ্ডে যাননি।

C/I/H

হামাস কারা? তাদের লক্ষ্য কী? কেন হঠাৎ ইসরায়েলে হামলা?

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *