ফজরের পর যে সকল কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ

ফজরের পর যে সকল কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ

জামাতের সহিত ফজর নামাজের মাধ্যমে দিন শুরু করতে পারা মুমিনের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের। কারণ যারা ফজর নামাজ পড়ে, তাদের ব্যাপারে প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। ‘ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৮০) দিনের শুরুতে যে ব্যক্তিটি আল্লাহর নিরাপত্তা লাভের ঘোষণা পেয়েছে, সে কতটা সৌভাগ্যবান। এখানেই শেষ নয়, যারা ফজর নামাজ জামাতে পড়ে, তাদের পক্ষে ফেরেশতারা সাক্ষী দেয়।

কারণ ফজর ও আসরের সময়টি পৃথিবীতে দায়িত্বরত ফেরেশতাদের পালা বদলের সময়, ফলে তারা আল্লাহর কাছে বান্দাদের অবস্থা বর্ণনাকালে নামাজিদের প্রশংসা করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, রাতের বেলা ও দিনের বেলা ফেরেশতাদের এক দলের পর আরেক দল তোমাদের কাছে এসে থাকে এবং তাদের উভয় দল ফজর ও আসর নামাজের সময় একত্র হয়। অতঃপর যারা তোমাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করেছে তারা উঠে যায়। তখন তাদের প্রভু মহান আল্লাহ তাদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা আমার বান্দাদের কিরূপ অবস্থায় রেখে এলে? যদিও তিনি তাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত। ফেরেশতারা তখন বলেন, আমরা যখন তাদের ছেড়ে চলে আসছিলাম তখন তারা নামাজ আদায় করছিল। আবার তাদের কাছে আমরা যখন গিয়েছিলাম তখনো তারা নামাজ আদায় করছিল। (মুসলিম, হাদিস : ১৩১৮)

ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত যারা নামাজের স্থানে বসে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে, তাদের জন্য আরো বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তাআলার জিকির করে, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য একটি হজ ও একটি ওমরার সাওয়াব রয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হজ ও ওমরার সাওয়াব)। (তিরমিজি, হাদিস : ৫৮৬)

প্রিয় নবীজি (সা.) প্রতিদিন ফজরের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত নামাজের স্থানে বসে থাকতেন। এ সময় তিনি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন। কখনো কখনো সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গেও কথা-বার্তা বলতেন, ইসলামী কবিতা শুনতেন।

তাই মুসল্লিদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে ধরে রাখার জন্য ফজর পর তাদের কোরআন মশক, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া পাঠ, তাফসির ইত্যাদির চর্চার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মহানবী (সা.) ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে অবস্থানকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে তিনি একে দাসী মুক্ত করার চেয়েও বেশি ফজিলতের মনে করতেন। (সূত্র : আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৬৭)।

তা ছাড়া সকাল বেলায় মানুষের রিজিক বণ্টন হয়, এ সময় আল্লাহর অনুগ্রহ প্রার্থনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসুল (সা.) আমার ঘরে এসে আমাকে ভোরবেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলেন, তখন আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিলেন এবং বললেন, মামণি, উঠো। তোমার রবের পক্ষ থেকে রিজিক গ্রহণ করো। অলসদের দলভুক্ত হইয়ো না। কেননা আল্লাহ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মধ্যে রিজিক বণ্টন করে থাকেন। ‘ (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব হাদিস : ২৬১৬)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভোরবেলার অবারিত রহমত বরকত অর্জন করার তাওফিক দান করুন।

সম্মানিত পাঠক, আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে আপনাকে স্বাগতম

Please Follow US – Halaltune.com | Facebook 

Please Subscribe US – Halal Tune Blog | Youtube

Related Articles

1 Comment

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • Baky Billah , May 1, 2024 @ 12:34 pm

    আল্লাহ আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *