ভারতে ২০০০ মুসল্লির বিরুদ্ধে মামলা

ভারতে ২০০০ মুসল্লির বিরুদ্ধে মামলা

ঈদগাহের বাইরে রাস্তায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করায় ভারতে ২ হাজার মুসল্লির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ঈদগাহের বাইরের রাস্তায় অনুমতি ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

আর এই ‘অপরাধেই’ তিনটি এফআইআর-এ ২ হাজারেরও বেশি মুসল্লির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পুলিশ। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ঈদগাহের বাইরের রাস্তায় অনুমতি ছাড়া ঈদের নামাজ পড়ার কারণে তিনটি এফআইআর-এ ২ হাজারেরও বেশি মুসল্লির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে।

বুধবার বাজারিয়া, বাবু পুরওয়া এবং জাজমাউ থানায় পৃথকভাবে এফআইআরগুলো নথিভুক্ত করা হয়। অবশ্য এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

এনডিটিভি বলছে, ঈদের দিন রাস্তায় লোকজনের নামাজ পড়ার ভিডিও ফুটেজ তৈরি করেছে পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘রাস্তায় কারা নামাজ পড়ছেন তা ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হবে, তারপর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে পুলিশের পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ সুলেমান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে তাদের টার্গেট করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঈদের দিন ঈদগাহের বাইরের রাস্তায় কিছু মুসল্লি নামাজ পড়েছিলেন। কারণ তারা নামাজে আসতে দেরি করে ফেলেছিলেন এবং ঈদগাহের ভেতরে আর কোনও জায়গা অবশিষ্ট ছিল না।

মোহাম্মদ সুলেমান বলেন, সিনিয়র সাব ইন্সপেক্টর (এসএসআই) ওমবীর সিংয়ের অভিযোগে ঈদগাহ ব্যবস্থাপনা কমিটির কিছু সদস্যসহ ১০০০-১৫০০ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাজারিয়া থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

ওমবীর সিং তার অভিযোগে বলেছেন, ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে ঈদের নামাজ পড়ার আহ্বান জানানোর সাথে সাথে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি রাস্তায় নামাজ পড়তে হাজির হন।

এনডিটিভি বলছে, রাস্তায় ঈদের নামাজ পড়ায় মুসল্লিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ১৮৬ ধারায় (কর্তব্য পালনে সরকারি কর্মচারিকে বাধা দেওয়া), ১৮৮ ধারা (সরকারি কর্মচারির মাধ্যমে যথাযথভাবে প্রবর্তিত আদেশ অমান্য করা), ২৮৩ ধারা (জনসাধারণের পথে বিপদ সৃষ্টি করা), ৩৪১ ধারা (অন্যায় অবরোধের শাস্তি) এবং ৩৫৩ ধারা (অপরাধমূলক শক্তি প্রয়োগ করে সরকারি কর্মচারিকে তার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা) এর অধীনে এসব মামলা দায়ের করা হয়।

আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শান্তি কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর ঈদের নামাজের জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল এবং রাস্তায় নামাজ না পড়ার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *