মুফতি ফয়জুল করিম ইস্যুতে সিইসির দুঃখ প্রকাশ, দুষলেন গণমাধ্যমকে

মুফতি ফয়জুল করিম ইস্যুতে সিইসির দুঃখ প্রকাশ, দুষলেন গণমাধ্যমকে

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বরিশাল সিটি ভোটের ১৪ দিন পর এসে নিজের দেওয়া সেই বক্তব্যের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করলেন তিনি। তবে সিইসির দাবি, তার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ জুন) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, গত ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিমের ওপর হামলা হয়। সেদিন এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেছিলেন, ‘উনি (ফয়জুল করিম) কি ইন্তেকাল করেছেন?’ এই বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়েন সিইসি।

এদিকে আজ (সোমবার) ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকেলে মেয়রপ্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ব্যাপারে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা। সেসময় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে ফয়জুল করিমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানতে চান সিইসি। তবে সেই বিষয়টি বিকৃতভাবে ও ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে ফয়জুল করিমকে সিইসি কটাক্ষ করেছেন ও তার মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এমনকি এই বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও ইসিকে হেয় প্রতিপন্ন করে সভা-সমাবেশে বক্তব্য দেন।

আসলে প্রকৃত বিষয় হলো ফয়জুল করিমের ওপর হামলা সম্পর্কে জানার পরই সিইসি এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাগণকে নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্ত করে বর্ণিত বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে মর্মে গত ১৪ জুন ইসি সচিবালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে মো. মঈনুল ইসলাম স্বপন ও মো. জহিরুল ইসলাম রেজভীকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপর্যুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও অন্যান্য অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে শনাক্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। এসব বিষয় ইসি সার্বক্ষণিক তদারকি করে যাচ্ছে।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে এবং কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরাগ বা বিরাগভাজন না হয়ে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি কখনো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মেয়রপ্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিমের সুনাম ও সম্মানহানি ঘটে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তার বিরুদ্ধে প্রচারিত সংবাদ সম্পূর্ণ অলীক, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত।

অসত্য সংবাদ প্রচার করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসি এবং সিইসিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তদুপরি, সিইসির কোনো মন্তব্য/বক্তব্যে কোনো ব্যক্তি মর্মাহত হলে তিনি সেজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সর্বোপরি ইসি প্রত্যাশা করে যে, রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ইসি সংক্রান্ত যেকোনো বক্তব্য ও সংবাদ প্রচার করবেন। পাশাপাশি অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত মন্তব্য ও সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *