আমরা সবাই পৃথিবীর নেক মানুষদের দোয়া পেতে চাই। আমরা বুযুর্গদের কাছে গিয়ে দোয়া কামনা করি। নিশ্চয় ব্যক্তিগতভাবে দোয়ার গুরুত্ব রয়েছে। কারণ আল্লাহ তায়ালার নেক বান্দাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। কিন্তু কে নেক বান্দা আর কে নেক বান্দা নয়, আমরা যথাযথভাবে নির্ণয় করতে সক্ষম নই।
আমরা কারো অভ্যন্তরীণ বিষয় জানি না। কে কতটুকু সৎ, তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। তবে আশার কথা হলো, কে কতটুকু সৎ তা না জেনেও পৃথিবীর সকল নেক বান্দাদের দোয়া পাওয়ার একটা উপায় রয়েছে। তা হলো, নিজে সৎ হয়ে যাওয়া।
আপনি যদি চান, আপনার জন্য সব আলেম দোয়া করুন, পৃথিবীর সমস্ত নেককার মানুষ দোয়া করুন— তাহলে আপনি নিজে সৎ হয়ে যান; নিজে ভালো হয়ে যান। আপনি যদি নিজে ভাল হয়ে যেতে পারেন, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবার দোয়া আপনার জন্য হয়ে যাবে।
কীভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবার দোয়া আপনার জন্য হয়ে যাবে? আমরা সবাই সালাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ি। এর একাংশে রয়েছে,
আমাদের ওপর এবং আল্লাহর সৎ বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক
সুতরাং যত মানুষ পৃথিবীতে সালাত পড়ছেন; বাইতুল্লায়, মদীনায়, মসজিদুল আকসায় ও বড়-ছোট পৃথিবীর সকল মসজিদে যত নারী-পুরুষ ও ভালো-মন্দ মানুষ সালাত পড়ছেন— সকলের দোয়া আপনি প্রাপ্ত হবেন। শর্ত হলো, আপনাকে নেক আমল করতে হবে। কারণ তারা সবাই সৎ বান্দাদের জন্য দোয়া করছেন, অসৎ বান্দাদের জন্য নয়। আপনি সৎ বান্দা হলে আপনিও এই দোয়ায় শামিল হয়ে যাবেন।
পৃথিবীর নেককার বান্দাদের দোয়া পাওয়ার উপায় একেবারে সোজা, নিজে সৎ হয়ে যাওয়া। দুঃখজনকভাবে এই সোজা পদ্ধতিটাই আমাদের কাছে কঠিন মনে হয়। আমরা নিজে সৎ না হয়েও, চুরি-ডাকিতি, মিথ্যা, চোগলখোরি ও সমাজে অশান্তির চেষ্টা করেও নেককার লোকদের দোয়া পেতে চাই। নিজে কোনো আমল না করেও, শুধু হুজুরকে টাকা-পয়সা দিয়ে হুজুরের দোয়া নিয়ে পার পেয়ে যেতে চাই।
পার পেয়ে যাওয়া কি এতই সোজা? যেসব দেশে সামনের দুয়ার দিয়ে কিছু হয় না, সবকিছু হয় পেছনের দরজা দিয়ে, এসকল দেশের মানুষেরা মনে করে আল্লাহর কাছ থেকেও সামনের দুয়ার দিয়ে মনে হয় কিছু আসবে না; এজন্য তারা পেছনের দুয়ার দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করে।
সুতরাং আমল করে জান্নাত লাভের চেষ্টা করুন। নিজে সৎ হয়ে গেলে আল্লাহরে অনুগ্রহ এমনিতেই পেয়ে যাবেন; স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেককারদের দোয়া প্রাপ্ত হবেন। এটাই নেককারদের দোয়া পাওয়ার সদর দরজা।